Saptannoyi Crest

Saptannoyi Crest

Saturday, 15 April 2017

শুভ আঢ্যর একটি কবিতা

ক্যালেণ্ডার ও লালদাগ 
শুভ আঢ্য
-----------------------------------------------
প্রতিটা তারিখ তোমার মধ্যে 
ঢুকিয়ে দিয়েছে একটা অন্তিমকাল
তুমি নতুনের কথা বলতে গিয়ে 
পেরোতে পারছ না ক্যালেণ্ডারের শিরদাঁড়া...
তোমার লাল দাগের বাইরে ছুটি হচ্ছে নতুন
তারিখগুলোর, অথচ তুমি চেয়ে রয়েছ পুরোনোর দিকে

প্রতিটা ক্যালেণ্ডার তার সময়গত অন্তিমতার কথা জানে
একটা নতুন বাগানে যেভাবে ফল আসবে বলে
পাখীরা শান দেয় ঠোঁটে, সেভাবেই তুমি তাকিয়ে রয়েছ,
আর হাওয়া সেই নতুন বীজ তোমার গর্ভের বাইরে
ছড়িয়ে দিচ্ছে, তুমি ফল হয়ে উঠছ এবং অন্তিমতা
প্রোথিত করছ গর্ভে, আরও একটা বছর
তোমার ভেতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে অন্তিমকাল, যেখানে
তোমার লাল দাগের বাইরে ছুটি হচ্ছে নতুন
তারিখগুলোর, যদিও তুমি চেয়ে রয়েছ পুরোনোর দিকেই

নিলয়ের একটি কবিতা

যাপন
..............

নিলয়
............................................

সকাল হতেই
হলুদবর্ণ গাঢ় এক স্যুপ, টেবিলের
গা থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে
স্যাঁতানো জানলার দিকে চলে গেল।
জানলা থেকে যতটা শহর,
তার ততটায় আধাআধি খবরের কাগজ।
স্যুপের গন্ধে সবাই, গোল করে জানলায় উঁকি দিচ্ছে।
ছবি তুলে রাখছে। কেউ শুঁকে বলছে, এ আর এমন কি?
চৌমাথায় একমাত্র খেঙরু, নাক টিপে ফাটা কুসুমের মত থ্যাবলানো সূর্য
দেখে গালাগাল দিচ্ছে
আর
বলছে,
..
তফাত যাও। তফাত যাও। তফাত যাও।

শুভম চক্রবর্তীর একটি কবিতা

শরীর
শুভম চক্রবর্তী
--------------------­­-----------


***
উদার অছিলা তুমি সন্তানসম্ভব
নিদ্রায় ও জাগরণে ট্যাবু ভেঙে যায়
গোল করে নেচে ওঠে শরীরপরব

********************­­***********

***
সব শব্দ নিরীশ্বর আপাতগহীন
পূর্ণতার বাড়ি যাই ভিক্ষাভান্ড হাতে
আকুলিবিকুলি মেখে ফিরি মাঝরাতে

********************­­*************


***
এখন যা কিছু ভ্রান্ত স্পর্শসুখ ছাড়া
সেতুর বুনট ভাঙে প্রতিটি কামড়ে
দ্বাররক্ষীহীন থাকে শরীরপাহারা

********************­­*************


***
তোমাকে কি দেবো বলো স্তনের আভাস
ছোঁয়াছুঁয়ি করি আর শান্তি নষ্ট হয়
এখন স্বীকার করি প্রেমটেমহীন
গড়াগড়ি খায় রোদে শরীরপ্রণয়

  ********************­­************


*****
কী মোহিনী জান বধু প্রিয় ছলাকলা
ঘুমের ভিতর ঢুকে পাঞ্জ করো স্নায়ু
হে নদীমাতৃক দেহ,হে কামকুশলা

  ********************­­**********


****
অপার মাধুরী ছিল চন্দ্রকরোটিতে
তুমি এসে ভেঙে দিলে সবুজ ন্যাকামী
দুর্বল লিঙ্গটি কাঁপে চন্দ্রাহত শীতে

  ********************­­***********


****
বাইট সমাপ্ত হলে,কবিতার গালে,
চুমু খাই,কাছে ডাকি,স্নেহ করি খুব
রাত্রিতে শরীর সত্য ; কবিতা সকালে


***
তোমাকে আঁকবো সোনা সে ক্ষমতা নেই
কলম ও কল্পনার দৌড় বড় কম
অপরাবাস্তব বড় শরীর-শরীর
সেখানেই আঁকা থাকে ছায়ার নিয়ম


****
ভোরের শীতল বাঁকে শরীর গড়ায়
ওগো মোহনিয়া এসো রক্ত-মাংস-হাড়ে
ভৈরব রাগের আঁচে শরীর পোড়াই

১০
****
দৃশ্যের ভিতর দিয়ে দেখেছি তোমাকে
যে দেখা অলীক আর যে দেখা জটিল
সে দেখার গলাদেহ পথে পড়ে থাকে

মৌসুমী বেরার একটি কবিতা

গুদামবাগান , পড়শি গলি , নুন মেখে চুন খসা দেড় হাজারি ঘরে আত্মনির্বাসনে আছি ।মৌসুমী বেরা


গুদামবাগান , পড়শি গলি , নুন মেখে চুন খসা দেড় হাজারি ঘরে আত্মনির্বাসনে আছি ।
তবু দেখি ভর দুপুরে ঘুলঘুলি চুঁইয়ে পড়তে থাকে পেষাই করা নরম মাটিতে তোমার পায়ের শব্দ ।
রোজ রাতে যখন নক্ষত্রদের গ্রাস করে একরাশ মুগ্ধতা চামচিকারা ছুটে আসে ঘুলঘুলি ভেঙে ,
বুঝি বা লক্ষ্যভেদী নিষাদের ভয়ে ... চরকি কাটে , আমার কুঁকড়ে ওঠে শরীর ।
আর ওপরের দেওয়াল টা অভিসম্পাত টুকু ছুঁড়ে ফেলে পালাতে চায় কোনোরকম ,
উঠতে থাকে আরো ওপরে , সব মাধ্যাকর্ষণ ছাড়িয়ে স্পুটনিকের মত ।
সবজিলতারা গতিপথ পাল্টে ফেলে ওই একটাই মাত্র আলোর উৎস থেকে ঝাঁপ দেয় অন্ধকারে , হলুদ বিষাদে ।
মগজাস্ত্রে লেপ্টে থাকা ডোরাকাটা দুঃখগুলোকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলবে বলেই ।
রোজ রাতে জানো ..... রক্ত - বীর্যের গন্ধ আসে দেওয়াল বেয়ে গুলিয়ে ওঠে গা , কালশিটে পড়ে চিমনিতে ।
দেখি সমগ্র বিশ্বের গোপন আঁতাত চলে !
আমার বন্দিদশা ভাঙবে বলে নীরাজনে বসে ।
দেওয়ালে তোমরা ঘুলঘুলি আর রেখো না গো ....

শুভ নববর্ষ ১৪২৪তে সৌরভ মিত্রের অঙ্কন